‘মানকাডিং’ আউট নিয়ে সবচেয়ে বেশী আলোচনা সমালোচনা হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ আইপিএলে। রবীচন্দ্রন অশ্বিন জশ বাটলারকে মানকাডিং আউট করার পর এটা নিয়ে বেশ সরগরম ছিল ক্রিকেট মহলে। ক্রিকেটের চেতনা বিরোধী ছিল বলে বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে অশ্বিন। অশ্বিনও ছুড়ে দেয় প্রশ্ন- আইন যখন আছে সেটা ব্যবহার করলে চেতনা পরিপন্থী হবে কেন?
‘মানকাডিং’ আউট নাম করা হয়েছিল ভারতের ভিনু মানকড়ের নামে। তিনিই প্রথম ১৯৪৭ সালে এরকম আউট করেন। সে বছর ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া-ভারত টেস্টে বোলিংয়ের সময় ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে দেখে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার বিল ব্রাউনকে আউট করেছিলেন ভারতের ভিনু মানকড়।
বোলার বল ছোড়ার আগে ননস্ট্রাইকিং এ থাকা ব্যাটার যদি তার নির্দিষ্ট স্থান থেকে বের হয়ে রানের জন্য ক্রিজ ছেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে বোলার চাইলে বল না ছোড়ে ক্রিজ ছেড়ে যাওয়া ব্যাটারকে আউট করতে পারে। এরকম আউটই ‘মানকাডিং’ আউট।
পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশের বাম-হাতি বোলার মোহাম্মদ রফিক এরকম সুযোগ পেয়েও ওমর গুলকে আউট করেন নি ক্রিকেটের চেতনা বিরোধী বলে। রফিকের কপালে তখন বেশ প্রশংসা জুটলেও বাংলাদেশ সে টেস্টে দুঃখজনকভাবে হেরে যায়।
অবশেষে ‘মানকাডিং’ আউট ক্রিকেটের চেতনার পরিপন্থী তকমা থেকে মুক্তি পাচ্ছে। ক্রিকেটের আইন প্রণয়নে দায়িত্বে থাকা ‘মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব – এমসিসি’ এবার মানকাডিং আউটকে (আইন-২১) সরিয়ে ‘নন স্ট্রাইকার রান আউট’ নামে (আইন-৩৮) এ স্থানান্তর করছে।
মানকাডিং আউটে বোলারের সমালোচনা হলেও এতে ব্যাটাররা নিচ্ছে অনৈতিক সুবিধা। প্রযুক্তির কল্যাণে যেখানে এক সুতোর ব্যবধানে ব্যাটার রান আউট হতে পারে সেখানে এরকম সুবিধা নেয়াকে বোলারের সাথে অবিচার হয় বলে মনে করেন ক্রিকেট বোদ্ধারা।
‘মানকাডিং’ এর সাথে পরিবর্তন আসছে ক্যাচ আউট হবার সময় দুই ব্যাটার একে অপরকে অতিক্রম করার নিয়মেও। এতোদিন ব্যাটার ক্যাচ আউট হবার আগে উভয় ব্যাটার একে অপরকে অতিক্রম করলে নন স্ট্রাইকিং ব্যাটার ব্যাট করতে পারতো পরের বলে। নতুন নিয়মে ওভারের শেষ বল না হলে ক্যাচের সময় ক্রসিং হলেও নতুন ব্যাটসম্যানকেই স্ট্রাইক নিতে হবে।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় নিষিদ্ধ হওয়া বলে লালার ব্যবহার স্থায়ীভাবেই নিষিদ্ধ থাকছে। নতুন এসব নিয়ম কার্যকর হবে ১ অক্টোবর ২০২২ থেকে বলে জানিয়েছে এমসিসি।