কোরআন পড়ুন

খুঁজুন

প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকা মানে নিজেকে ও দেশকে পিছিয়ে রাখা

প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকা মানে নিজেকে ও দেশকে পিছিয়ে রাখা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মেশিন দ্বারা প্রদর্শিত বুদ্ধি। মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তা শক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন হয়ে উঠেছে একটি একাডেমিক শিক্ষার ক্ষেত্র যেখানে পড়ানো হয় কিভাবে কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার তৈরি করে বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করতে হয়। এটি দিন দিন আমাদের জীবনে কি যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে তা করোনা মহামারি বুঝিয়ে দিয়েছে।

বাইরের দেশগুলো (চীন,জাপান,আমেরিকাসহ আরো অনেক দেশ) অনেক আগে থেকেই রোবট প্রযুক্তির সাথে পরিচিত। তবে আশার কথা আমাদের দেশেও এই শব্দটি বেশি শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েক বছর থেকে। আর কোভিড-১৯ আসার পর এর গুরুত্ব ও চাহিদা বেড়ে গেছে বহুগুণ। করোনাকালীন সময় এর চেয়ে বড় উপকারী প্রযুক্তি কি হতে পারে! বাইরের দেশগুলো রোবটের মাধ্যমে রোগীর সেবাশুশ্রূষা থেকে শুরু করে শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক উপকার পাচ্ছে। এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী গ্রাহকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করছে উড়ন্ত ড্রোন। আর ড্রাইভারবিহীন গাড়ি তো ইতিমধ্যে বাজারে এসে গেছে।

আরো পড়ুন

আমরা হয়তো চিন্তা করছি, এগুলো আমাদের এখানে আসতে আরো সময় লাগবে। কিন্তু একটু ভেবে দেখুন যখন বাইরের দেশে স্মার্টফোন চালু হল তখন আমাদের কাছে এটি কাল্পনিক গল্পের মতো মনে হতো যে ফোনে কিভাবে সেলফি তোলে, কিভাবে মুহূর্তের মধ্যে ভিডিওকল ও মেসেজ পাঠায় আরো কত কি! আর এখন স্মার্টফোন প্রায় সবার ঘরে ঘরে।

এখন যেমন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে ঠিক সামনের দিনগুলোতে আরো বাড়বে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে, এখন আমাদের যে নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে তাদেরকে আমরা প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখতে পারবো না। কারণ তারা প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকা মানে নিজেকে ও দেশকে পিছিয়ে রাখা। নতুন প্রজন্মের চিন্তা ভাবনায় ধ্যান ধারণায় এখন থেকে ঢুকিয়ে দিতে হবে যে, তোমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করবে মানুষের উপকারে, অপকারে নয়। কারণ আগামী দিনগুলোতে শতভাগ কাজ চলে যাবে প্রযুক্তির হাতে সেটা সেবামূলক হোক কিংবা চাকরি। আবার শুধুমাত্র প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হলে চলবে না, প্রযুক্তি তৈরিতোও আমাদের দক্ষ হওয়া চাই। কারণ প্রযুক্তির প্রতিটি খুঁটিনাটি জিনিস আমাদের চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তাদেরকে এখন থেকেই কোডিং,পাইথন, জাভা, সি ল্যাগুইজ ইত্যাদি মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে। তাহলে তারা লাইকি, টিকটক করে সময় নষ্ট করবে না।

ইতিমধ্যে নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা এগুলো নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। প্রচুর সময় নষ্ট করছে এগুলোর পেছনে। এ অ্যাপগুলোর মাত্রারিক্ত ব্যবহার তাদের সৃজনশীলতা নষ্ট করে দিচ্ছে। শিক্ষার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পায় না বলে সৃষ্টি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। বিল গেটসের কথাই ধরি, যখন তিনি ক্লাস এইটের ছাত্র তখন স্কুলের কম্পিউটার ক্লাব থেকে তার প্রোগ্রামিংয়ে হাতেখড়ি। গেটসের ভাষ্যমতে, এমন একটি সপ্তাহও যায়নি যখন অন্তত ৩০ ঘন্টা ঐ কম্পিউটার রুমে তিনি কাটান নি। মানে প্রতিদিন কম পক্ষে ৪ ঘন্টা। আর আমরা কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের কথা শুনছি সবচেয়ে বেশি গত কয়েক বছর থেকে। অথচ বিল গেটস সেই ১৯৭১ সালেই সাত মাসে ১,৫৭৫ ঘন্টা ব্যয় করেন কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের পেছনে। হার্ভার্ডের স্নাতক পড়া মাঝপথে তিনি যখন ছেড়ে দিলেন তখন ইতোমধ্যে তিনি নিজেই একটা সফটওয়্যার কোম্পানির মালিক। হয়তো আমরা অনেকেই মনে করব বিল গেটসের ব্রেইন প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত। কিন্তু অনেক সময় ন্যাচারাল ট্যালেন্টও যে খুব আহমরি সাফল্যের জন্ম দেয় তা ও নয়। বরং পরীক্ষা করে দেখা গেল খুব সাধারণ মানের মানুষেরাই অনেক বেশি সফল, কারণ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নেই বলে অনুশীলনের বেলায় তারা কোনো ফাঁকিবাজি করে না।

তাই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তুমি অনেক ভালো ও সৃজনশীল কাজ করতে পারো-এটা তাদের (বিশেষ করে স্কুলে যাওয়া শির্ক্ষাথীর মগজে ঢুকিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদেরই নিতে হবে।