কোরআন পড়ুন

খুঁজুন

নিম গাছের যত উপকারিতা

নিমগাছ

নিম গাছের নাম শুনলেই আমরা নাক ছিটকাই কিন্তু আমরা সবাই জানি এর উপকারিতা অনেক। নিম একটি একাধিক গুন সম্পূর্ণ গাছ। যা দেখতে যেমন সুন্দর ঠিক তেমনই তার উপকারিতা। নিম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta indica চিরসবুজ এই গাছটি লম্বায় প্রায় ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত হয়। এর কান্ডের ব্যাস ২০-৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। নিম গাছে জুন-জুলাই এর দিকে ফল হয়। কাঁচা থাকতে ফল সবুজ থাকে আর পাকা অবস্থায় ফল হলুদ বর্ণ ধারণ করে। একটি নিম গাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে ১০ বছর। এখন আসা যাক নিম গাছের উপকারিতায়।

নিম গাছের ছালের উপকারিতা:

১। নিম গাছের ছাল ম্যালেরিয়া থেকে পরিত্রান পেতে সাহায্য করে
২। পেট এবং অন্তের আলসার থেকে পরিত্রান পেতে সাহায্য করে
৩। সকল ধরণের চর্মরোগের জন্য নিমের ছালের তুলনা নেই
৪। শরীরের জ্বর ও বেথা নিরাময় সাহায্য করে।

নিম গাছের ফুলের উপকারিতা:

১। নিম ফুল পিত্ত কমাতে সাহায্য করে
২। কফ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
৩। অন্ত্রের কৃমির চিকিৎসার জন্য ব্যাবহার হয় ।
৪। বমি ভাব দূর করতে নিম ফুল বেবহার হয়

নিম গাছের ফলের উপকারিতা:

১। অশ্ব রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে
২। মুত্রনালির রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে
৩। চোখের রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে
৪। ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে
৫।কুষ্ঠ রোগের জন্য ব্যাবহার হয়

নিম গাছের পাতার উপকারিতা:

১। চোখের রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে
২। রক্তাক্ত নাক নিরাময়ে সাহায্য করে
৩। কুষ্ঠ রোগের জন্য ব্যাবহার হয়
৪। পেট খারাপ রোগ নিরাময়ের জন্য
৫। খিদে কমে যাওয়া রোগ নিরাময়ে
৬। হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালির রোগ নিরাময়ে
৭। মাড়ির সমস্যা সমাধানে ব্যাবহার হয়
৮। লিভার এর সমস্যা সমাধান এ ব্যাবহার হয়

মহাত্মা গান্ধী বলেছেন, “নিম গাছ হলো প্রাকৃতিক ঔষধিগাছের রানী।”

ডা. নিচোলাস ট্যালাব, একজন প্লান্ট বায়োলজিস্ট, তিনি বলেছেন, “নিম গাছ একটি চিকিৎসার গাছ যা অদ্ভুত বায়োলজিক গুণ এবং ঔষধিক মৌলিক সম্পদ ধারণ করে। এটি আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং মানব স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত বিশেষ গুণ প্রদান করতে সক্ষম।

Neem is nature’s answer to many of our health and environmental challenges.”
– Dr. David FPrasad

Neem’s significance in natural medicine is unparalleled.” – Dr. Rajendra Prasad

নিম গাছের এত গুন দেখে নিম গাছের উপর মগ্ধ হয়ে বিভিন্ন কবি বিভিন্ন কবিতা লিখেছেন। যেমন বিষ্ণু সাহা, বনফুল, শউখ ঘোস, আয়শা সিদ্দিকা, আরও অনেক কবি নিম গাছ সম্পর্কে কবিতা লিখেছেন । নিম গাছ সম্পর্কে কবিতার মধ্যে আমার পছন্দের কবিতা হল নিচের কবিতাটি-

নিম গাছ তুমি আমার
– বিষ্ণু সাহা

নিমের গাছের মতো তুমি আমার জীবনে
ছড়িয়ে আছো তুমি সবুজের আগুনে
আমি ছড়িয়ে থাকা মাটির ধুলো
তুমি আকাশ ভরা নক্ষত্র,তুমি রাতের গল্পগুলো
তুমি রজনীগ্ধা,তুমি পাগল করা মিষ্টি গন্ধ
তুমি দোপাটি,তুমি চোখ বুঝে থাকা মলিন ছন্দ
আমি অনায়াসে পারি দিই তেরো নদী,সমুদ্র
আমি তো….
হারিয়ে গিয়েছি
পাবোনা জেনেও ভালোবেসেছি।
বটের গাছের মতো তুমি আমার মরণে
দাড়িয়ে আছো তুমি অসময় ফাগুনে
আমি দাড়িয়ে থাকা নিস্তব্ধ আলো
তুমি কাছের তারা ,তুমি দিনের নিকষ কালো
তুমি কামিনী, তুমি নেশার মতো মেরুন শাড়ি
তুমি রাধাকুঞ্জ,তুমি মাঠের লাল সুন্দরী
আমি খুঁজি নাম না জানা ফুল, যার অবাক গন্ধ
আমি তো…
হারিয়ে গিয়েছি
পাবোনা জেনেও ভালোবেসেছি।
তুমি রংধনু, তুমি আলোর সাত রঙের ছটা
তুমি বৃষ্টি, তুমি আকাশের কষ্টের বোঝা
তুমি কুয়াশা, তুমি শীতের স্বচ্ছ চাদর
তুমি ঘাসফুল,তুমি সবুজ ঘাসে নরম আদর
তুমি নও তো স্বপ্ন আমার, তুমি জীবনের সত্য আশা
তুমি সমুদ্র, তুমি অসীম জলে আমার ভালোবাসা
তুমি কাশবন, তুমি শরতে আবার ফিরে আসা।
আমি তো,
হারিয়ে গিয়েছি,
পাবোনা জেনেও ভালোবেসেছি।
তুমি কাঞ্চনজঙ্ঘা, তুমি বৃষ্টি শেষে মাটির গন্ধ
তুমি কাশ্মীর, তুমি তুষারপাতে চোখ বন্ধ
তুমি সাজেক, তুমি মেঘমালতী মেঘের কন্যা
তুমি সাদা পাথর, তুমি পাহাড় ঘেঁষা নদীর ঝর্না
তুমি দার্জিলিং, তুমি মেঘের ভিতর ট্রেনের লাইন
তুমি আদালত, তুমি নিয়ম কষা কঠিন আইন
তুমি বিশ্বযুদ্ধ, তুমি মাটিতে পোতা গোপন মাইন
আমি তো..
হারিয়ে গিয়েছি
পাবোনা জেনেও ভালোবেসেছি।
আমি তো হারিয়ে গিয়েছি,
পাবোনা জেনেও ভালোবেসেছি।

আমাদের উচিৎ প্রত্যেকটি বাসায় কমপক্ষে একটি করে হলে ও নিম গাছ লাগানো ।আমরা বর্তমান প্রজন্ম আমরা যদি সতর্ক হয়ে যাই তাহলে আমাদের আগামী দিন গুলো হবে সুস্থ ও সুন্দর ।